IQNA

আহলুল বাইতের (আঃ) অষ্টম নক্ষত্রের কিছু অমিয় বাণী

13:54 - July 25, 2018
1
সংবাদ: 2606295
১১ যিলকদ মহানবী (সাঃ)-এর পবিত্র আহলুল বাইতের (আঃ) বারো ইমামের অষ্টম ইমাম হযরত আলী ইবনে মূসা আর রিযা ( আঃ )- এর শুভ জন্মদিন। তিনি ১৪৮ হিজরীর এই দিনে ( ১১ যিলকদ ) জন্ম গ্রহণ করেন। আজ বিশ্বব্যাপী পালন করা হচ্ছে এ দিবস।



বার্তা সংস্থা ইকনা: তাঁর পিতা সপ্তম ইমাম হযরত মূসা ইবনে জাফার আল কাযিম (আঃ)। তাঁর কুনিয়াহ আবুল হাসান এবং তাঁর উপাধি রিযা। তিনি পিতা ইমাম কাযিম (আঃ)-এর শাহাদতের পর ১৮৩ হিজরী সালে ৩৫ বছর বয়সে ইমামতের মাকামে অধিষ্ঠিত হন। এ মহান ইমামের শুভ জন্মদিন উপলক্ষে তাঁর কিছু অমিয় বাণীর ( হাদীস ) অনুবাদ নিচে দেয়া হলঃ

১. সর্বোত্তম ও সবচেয়ে সম্মানজনক গুণ হচ্ছে সৎকর্ম সম্পাদন, দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য এবং আশাকারীর ( অভাবীর ) আশা ( অভাব ) পূরণ করা।(বিহারুল আনওয়ার , খঃ ৭৮ , পৃঃ ৩৫৫ )

أَجَلُّ الخَلَائِقِ وَ أَکرَمُهَا : اصطِنَاعُ المَعرُوفِ وَ إِغَاثَةُ المَلهُوفِ وَ تَحقِیقُ أَمَلِ الآمِلِ

২. বিশ্বস্ত ব্যক্তি ( আমীন ) তোমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা ( খিয়ানত ) করেনি বা করে না। কিন্তু তুমি বিশ্বাসঘাতককে ( খায়েনকে ) বিশ্বস্ত ( আমীন ) মনে করেছিলে (বা মনে কর)। ( বিহারুল আনওয়ার , খঃ ৭৮,পৃঃ ৩৩৫ )

 

لَم یَخُنکَ الأَمِینُ وَلکِنِ ائتَمَنتَ الخَائِنَ

৩. তোমার দ্বীনী ভাইদের জন্য ঐ জিনিস ব্যয় করো না তোমার জন্য যার অপকারিতা ও ক্ষতি তাদের জন্য তার (ঐ জিনিসেরই) উপকারিতার চেয়ে বেশি।(মুসনাদুল ইমামির রিযা ( আঃ),খঃ ২, পৃঃ৩১৪)

لَا تَبذُل لِإِخوانِکَ مِن نَفسِکَ مَا ضَرَرُهُ عَلَیکَ أَکثَرُ مِن نَفعِهِ لَهُم

৪. ঈমান ( প্রকৃত বিশ্বাস ) হচ্ছে কণ্ঠে ( মৌখিক ) স্বীকারোক্তি, অন্তরের মাধ্যমে জ্ঞান ও পরিচিতি (অর্জন) এবং (দৈহিক) অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাহায্যে সৎকর্ম ( নেক আমল ) সম্পাদন (করা) ।( আল-খিসাল ,পৃঃ ১৭৭)

الإِیمَانُ إِقرَارٌ بِاللِّسَانِ وَ مَعرِفَةٌ بِالقَلبِ وَ عَمَلٌ بِالأَرکَانِ

৫. সর্বোত্তম বুদ্ধিবৃত্তি ( প্রজ্ঞা ) হচ্ছে নিজ সত্ত্বা সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান ও পরিচিতি ( আত্ম-পরিচিতি বা আত্মজ্ঞান )। ( বিহারুল আনওয়ার , খঃ ৭৮, পৃঃ ৩৫২ )

أَفضَلُ العَقلِ مَعرِفَةُ الإِنسَانِ نَفسَهُ

৬. যে ব্যক্তি পারলৌকিক প্রতিদানের ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস করে তার উচিৎ (বেশি বেশি) দান করা।( উয়ূনু আখবারির রিযা ( আঃ ) , খঃ ২ , পৃঃ ৫৪ )

مَن أَیقَنَ بِالخَلَفِ جَادَ بِالعَطِیَّةِ

৭. যে মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে কাউকে নিজের দ্বীনী ভাই হিসেবে গ্রহণ করবে সে বেহেশতে একটি গৃহ প্রাপ্ত হবে। ( সওয়াবুল আমাল , পৃঃ ১৫১ )

مَنِ استَفَابدَ أَخَاً فِی اللهِ عَزَّ وَ حَلَّ استَفَادَ بَیتَاً فِی الجَنَّةِ

৮. মানুষের সর্বোত্তম সম্পদ ও সঞ্চয় হচ্ছে দান-সদকা (করা)। ( (উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ), খঃ ৭৮ , পৃঃ ৫৪ ))

خَیرُ مَالِ المَرءِ وَ ذَخَائِرِهِ الصَّدَقَةُ .

৯. সৎ স্বভাব ও আচরণ ( চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য) দুই প্রকারঃ ১. সহজাত ( ফিতরী) এবং ঐচ্ছিক ( নিয়ত ও সংকল্প ভিত্তিক )। আর ঐচ্ছিক গুণ ও স্বভাবের অধিকারী ব্যক্তিটি হচ্ছে উত্তম। ( ফিকহুর রিযা ( আঃ) , পৃঃ ৩৭৯)

حُسنُ الخُلُقِ سَجِیَّةٌ وَ نِیَّةٌ وَ صَاحِبُ النِّیَّةِ أَفضَلُ .

১০. বিপদাপদে ধৈর্য ধরা একটি সুন্দর গুণ ও বৈশিষ্ট্য । আর এর চেয়েও উত্তম হচ্ছে হারাম বিষয়াদির বিপরীতে ধৈর্যধারণ ( ধৈর্য্য সহকারে হারামগুলো থেকে দূরে থাকা এবং সেগুলো বর্জন করা । সব হারাম বর্জন ও পরিহার করা ফরয তথা অপরিহার্য ও জরুরী )।( মিশকাতুল আনওয়ার , পৃঃ ২২ )

إِنّ الصَّبرَ عَلَی البَلَاءِ حَسَنٌ جَمِیلٌ وَ أَفضَلُ مِنهُ عَنِ المَحَارِمِ .

১১. মহান আল্লাহ পাকের আনুগত্যের সর্বোচ্চ মাত্রা ও পর্যায় হচ্ছে ধৈর্যাবলম্বন ও সন্তুষ্টি । ( ফিকহুর রিযা ( আঃ ) পৃঃ ৩৫৯ )

رَأسُ الطَّاعَةِ لِلّهِ الصَّبرَ وَ الرِّضَا .

১৬. দান-সদকা করার চেয়েও উত্তম হচ্ছে দুর্বলকে তোমার সাহায্য করা । ( তুহাফুল উকূল, পৃঃ ৫২৫)

عَونُکَ لِلضَّعِیفِ أَفضَلُ مِنَ الصَّدَقَةِ .

১২. ইবাদত কেবল বেশি বেশি নামায পড়া ও ব়োযা রাখা নয় । বরং ইবাদত হচ্ছে মহান আল্লাহর ব্যাপারে ( গভীর ) চিন্তা করা।( উসূলুল কাফী , খঃ ২ , পৃঃ ৫৫)

لَیسَ العِبَادَةُ کَثرَةَ الصَّلَاةِ وَ الصَّومِ إِنَّمَا العِبَادَةٌ التَّفَکُّرُ فِی أَمرِ اللهِ عَزَّ وَ جَلَّ .

১৩. বন্ধুর প্রতি বিনয়ী ( নম্র) হও , শত্রুর ব্যাপারে সতর্কতাবলম্বন কর এবং সবার সাথে হাস্যোৎফুল্ল থাক । ( বিহারুল আনওয়ার , খঃ ৭৮ , পৃঃ ৩৫৬ )

اِصحَبِ الصَّدِیقَ بِالتَّوَاضُعِ وَ العَدُوَّ بِالتَّحَرُّزِ وَ العَامَّةَ بِالبِشرِ .

১৪. আমি অবাক হচ্ছি ঐ ব্যক্তির ব্যাপারে যে নিজ সম্পদ ব্যয় করে দাসদের ক্রয় করে দাসত্ব থেকে তাদের মুক্তি দেয় । অথচ সে কেন তার সদাচরণ দিয়ে (দাসত্বের বন্ধন থেকে )মুক্ত স্বাধীন ব্যক্তিদেরকে ক্রয় করবে না....!( অর্থাৎ মানুষ সদাচরণ ও সুন্দর ব্যবহারের দাস এবং সদাচরণকারী তার সদ্ব্যবহার ও সদাচরণ দিয়ে মানুষের মন জয় করে এবং তাকে করে বশীভূত। ( ফিকহুর রিযা ( আঃ) , পৃঃ ৩৫৪ )

عَجِبتُ لِمَن یَشتَرِی العَبِیدَ بِمَالِهِ فَیُعتِقُهُم کَیفَ لَا یَشتَرِی الأَحرارَ بِحُسنِ خُلقِهِ.

১৫. অন্যদের হাতে যা আছে সেটার প্রতি ( অর্থাৎ মানুষের ধন-সম্পদের প্রতি ) ভ্রুক্ষেপ না করা দান করা ও দানশীলতার চেয়েও উত্তম। ( ফিকহুর রিযা ( আঃ ) , পৃঃ ৩৬৭)

سَخَاءُ النَّفسِ عَمَّا فِی أَیدِی النَّاسِ أَکثَرُ مِن سَخَاءِ البَذلِ

১৭. যা দিয়ে মান-সম্ভ্রম রক্ষা করা হয় তা হচ্ছে সর্বোত্তম সম্পদ। ( বিহারুল আনওয়ার , খঃ ৭৮ , পৃঃ ৩৫৫ )

أَفضَلُ المَالِ مَا وُقِیَ بِهِ العِرضُ .

 

১৮. দুগ্ধপোষ্য শিশুর জন্য মাতৃস্তন্যের চেয়ে উত্তম কোন দুগ্ধ ( খাদ্য ) নেই ।(উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ), খঃ২ , পৃঃ ৩৪)

لَیسَ لِلصَّبِیِّ لَبَنٌ خَیرٌ مِن لَبَنِ أُمِّهِ .

১৯. যে ব্যক্তি নিজেকে নিজেই নিন্দা ও অপবাদের ( তোহমৎ ) সম্মুখীন ( যোগ্য ) করে সে যেন ঐ ব্যক্তিকে তিরস্কার না করে যে তার ব্যাপারে ( এ কারণে ) সন্দেহ ও কুধারণা পোষণ করেছে।(( অর্থাৎ যে ব্যক্তি নিজের মান-সম্মান রক্ষা করে না এবং নিজ কর্মকাণ্ড,আচার-আচরণ ও স্বভাব-চরিত্রের মাধ্যমে নিজেকে মানুষের কাছে অপমান, অপবাদ ও নিন্দার পাত্র করে তার চরিত্রের ব্যাপারে এ কারণে কোনো ব্যক্তি যদি সন্দেহ ও কুধারণা পোষণ করে তাহলে এজন্য তাকে ( সন্দেহ পোষণকারীকে ) সে তিরস্কার করতে পারবে না।))( সহীফাতুর রিযা (আঃ), পৃঃ ৭১)

مَن عَرَضَ نَفسَهُ لِلتُّهمَةِ فَلَا یَلُومَنَّ مَن أَسَاءَ الظَّنَّ بِهِ .

২০. যে ব্যক্তি বিদ্রোহ ও বিরুদ্ধাচরণকে ( بغی ) ঢাল ( বর্ম ) হিসেবে নেয় সে (তার থেকে) শাস্তি বা দণ্ড প্রতিহত করতে পারে না।( অর্থাৎ সে শাস্তিভোগ ও দণ্ডপ্রাপ্তি থেকে রেহাই পাবে না।তাই জালিম অন্যায়কারী বিদ্রোহী শেষ পর্যন্ত শাস্তি পাবেই।)।(চল্লিশ হাদীস , পৃঃ ১২৩)

لَا یَعدَمُ العُقُوبَةَ مَنِ ادِّرَعَ بِالبَغیِ .

২১. যে ব্যক্তি চায় সবচেয়ে ধনী ও সম্পদশালী হতে তার উচিৎ মহান আল্লাহর কাছে যা আছে তাতে আস্থা রাখা। ( ফিকহুর রিযা (আঃ), পৃঃ ৩৬৪)

مَن أَرَادَ أَن یَکُونَ أَغنَی النَّاسِ فَلیَکُن وَاثِقَاً بِمَا عِندَ اللهِ عَزَّ وَ جَلَّ .

২২. যে ব্যক্তি সত্যের জন্য ( পক্ষে ) ধৈর্যাবলম্বন করেছে সে যে ব্যাপারে ধৈর্যাবলম্বন করেছে মহান আল্লাহ তার চেয়ে উত্তম প্রতিদান ( সওয়াব ও পুরষ্কার ) তাকে দেবেন।( ফিকহুর রিযা (আঃ), পৃঃ ৩৬৮)

مَن صَبَرَ لِلحَقِّ عَوَّضَهُ اللهُ خَیرَاً مِمَّا صَبَرَ عَلَیهِ .

২৩. যে ব্যক্তি চায় যে তার মৃত্যুকাল বিলম্বিত হোক এবং তার জীবিকা ( রিযক) বৃদ্ধি পাক তার উচিৎ আত্মীয়তার সম্পর্ক ( সিলাতুর রাহেম ) রক্ষা করা ( অর্থাৎ নিকটাত্মীয়দের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং তাদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করা )।( উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ), খঃ২, পৃঃ ৪৪)

مَن سَرَّهُ أَن یُنسَأُ فِی أَجَلِهِ وَ یُزَادُ فِی رِزقِهِ فَلیَصِل رَحِمَهُ .

২৪. যে ব্যক্তি কোন মুমিনের দুঃখ-কষ্ট দূর করবে মহান আল্লাহ কিয়ামত দিবসে তার অন্তরের দুঃখ-কষ্ট দূর করে দেবেন ( অর্থাৎ তাকে সুখী করবেন )(উসূলুল কাফী , খঃ২ , পৃঃ ২০০)

مَن فَرَّجَ عَن مُؤمِنٍ فَرَجَ اللهُ عَن قَلبِهِ یَومَ القِیَامَةِ .

২৫. নেয়ামতগুলোর সুপ্রতিবেশী হয়ে যাও ( অর্থাৎ মহান আল্লাহর নেয়ামতগুলোর সদ্ব্যবহার কর )। কারণ নেয়ামত প্রস্থান করে ও চলে যায় (অর্থাৎ তা ক্ষণস্থায়ী )। আর তা ( একবার ) কারো কাছ থেকে চলে গেলে তার কাছে আর ফিরে আসে না।(তুহাফুল উকূল , পৃঃ ৫২৬)

أَحسِنُوا جِوَارَ النِّعَمِ فَإِنَّهَا وَحشِیّةٌ مَا نَأَت عَن قَومٍ فَعَادت إِلَیهِم

২৬. সুগন্ধি ব্যবহার করা হচ্ছে মহান নবীদের (আঃ) এক অন্যতম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য॥ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা হচ্ছে মহান নবীদের (আঃ) এক অন্যতম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।( মাকারিমুল আখলাক – তুহাফুল উকূল , পৃঃ ৪২ , ৫১৯)

مِن أَخلَاقِ الأَنبِیَاءِ ( عَلَیهِمُ السَّلَامُ ) التَّطّیُّبُ ، مِن أَخلَاقِ الأَنبِیَاءِ ( عَلَیهِمُ السَّلَامُ )التَّنَظُّفُ .

২৭. যে ব্যক্তি চুক্তি ( প্রতিশ্রুতি,অঙ্গীকার ) ভঙ্গ করে সে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো (বিপদাপদগুলো) প্রতিহত করতে পারবে না ( অর্থাৎ সেগুলো থেকে নিরাপদ থাকবে না )।( কাশফুল গাম্মাহ , খঃ৩ , পৃঃ ১৪৮)

لَا یَعدَمُ المَرءُ دَائِرةَ السَّوءِ مَعَ نَکثِ الصَّفقَةِ .

২৮. যখন প্রজ্ঞাবানরা প্রজ্ঞাকে ( হিকমত ) যারা এর যোগ্য নয় তাদের কাছে (অর্থাৎ অপাত্রের কাছে) উপস্থাপন করেছেন তখন তারা আসলেই তা ( হিকমত ) হারিয়ে ফেলেছেন। ( বিহারুল আনওয়ার , খঃ৭৮, পৃঃ ৩৪৫)

 

إِنّ الحُکَمَاءَ ضَیَّعُوا الحِکمَةَ لَمَّا وَضَعُوهَا عِندَ غَیرِ أَهلِهَا .

২৯. যখন সত্য তোমাদের কাছে হবে স্পষ্ট ও উদঘাটিত ( অর্থাৎ তোমরা সত্য সম্পর্কে অবগত হবে ) তখন সত্য স্পষ্ট ও উদঘাটিত হওয়ায় ক্রুদ্ধ হয়ো না।(ফিকহুর রিযা (আঃ), পৃঃ ৩৩৮)

لَا تَغضَبُوا مِنَ الحَقِّ إِذَا صُدِعتُم بِهِ .

৩০. মেহমানের (অতিথির) হক ( অধিকার ) হচ্ছে যে তুমি (মেজবান) বাড়ীর ভিতর থেকে(সদর) দরজা পর্যন্ত তার সাথে হেটে গিয়ে তাকে বিদায় জানাবে।( উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ) , খঃ২ , পৃঃ ৭০)

مِن حَقِّ الضَّیفِ أَن تَمشِیَ مَعَهُ فَتُخرِجَهُ مِن حَرِیمِکَ إِلَی البَابِ .

৩১. ঈমান হচ্ছেঃ ফরযগুলো আদায় করা (আঞ্জাম দেয়া) এবং হারামগুলো ( শরীয়ত কর্তৃক নিষিদ্ধ বিষয়াদি ) বর্জন ও পরিত্যাগ করা।(তুহাফুল উকূল , পৃঃ ৪৯৫)

اَلإِیمَانُ : أَدَاءُ الفَرَائِضِ وَ اجتِنَابُ المَحَارِمِ .

৩২. যে ব্যক্তি মহান আল্লাহকে যা ক্রুদ্ধ ও অসন্তুষ্ট করে তা দিয়ে ( জালিম ) শাসনকর্তাকে ( বাদশাহ বা সুলতান ) সন্তুষ্ট করবে সে মহান আল্লাহর দ্বীন ( ধর্ম ) থেকে খারিজ ( বের ) হয়ে যাবে। (উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ) , খঃ২, পৃঃ ৬৯)

مَن أَرضَی سُلطَانَاً بِمَا یُسخِطُ اللهَ خَرَجَ عَن دِینِ اللهِ عَزَّ وَ جَلَّ .

৩৩. সদাচরণ ( সদ্ব্যবহার ) অপেক্ষা ( কিয়ামত দিবসে স্থাপিত ) মানদণ্ডে ( মীযান ) আর কোন জিনিস বেশি ভারী হবে না।( উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ) , খঃ২ , পৃঃ ২৭)

مَا مِن شَیءٍ أَثقَلَ فِی المِیزَانِ مِن حُسنِ الخُلُقِ .

৩৪. তোমরা তোমাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে জনগণকে কখনোই সন্তুষ্ট ( রাজী ) করতে পারবে না। তাই তোমরা মিষ্টিমুখে এবং সদাচরণ দিয়ে তাদেরকে সন্তুষ্ট করবে।(মুসনাদুল ইমামির রিযা (আঃ), খঃ১ , পৃঃ ২৯২)

إِنَّکُم لَن تَسَعَوُا النَّاسَ بِأَموَالَکُم فَسَعُوهُم بِطَلَاقَةِ الوَجهِ وَ حُسنِ اللِّقَاءِ .

৩৫. নীরবতা ও মৌনতাবলম্বন হচ্ছে হিকমতের ( প্রজ্ঞা ) এক অন্যতম ( প্রবেশ )দ্বার বিশেষ।(তুহাফুল উকূল, পৃঃ ৫২৩)

اَلصَّمتُ بَابٌ مِن أَبوَابِ الحِکمَةِ .

৩৬. প্রত্যেক মানুষের বন্ধু ও সঙ্গী হচ্ছে তার বিবেক-বুদ্ধি ( আকল ) এবং তার শত্রু হচ্ছে তার অজ্ঞতা।( উসূলুল কাফী , খঃ১ , পৃঃ১১)

صَدِیقُ کُلِّ امرِئٍ عَقلُهُ وَ عَدُوُّهُ جَهلُهُ .

৩৭.(মানুষের সাথে মানুষের) অন্তরঙ্গতা ও ঘনিষ্ঠতা মানুষের ভয়ভীতি ও বিহ্বলতা দূর করে দেয় এবং ( অন্যের কাছে ) সাহায্য প্রার্থনা হচ্ছে দুর্ভাগ্যের মূল চাবিকাঠি বা কারণ। (বিহারুল আনওয়ার , খঃ৭৮ , পৃঃ৩৫৬)

اَلأُنسُ یُذهِبُ الَمَهَابَةَ وَ المَسئَلَةُ مِفتَاحٌ فِی البُؤسِ .

৩৮. অহংকার মহান আল্লাহর ভূষণ। অতএব যে মহান আল্লাহ পাকের সাথে তার এ ভূষণ ছিনিয়ে নেয়ার জন্য দ্বন্দ্বে লিপ্ত হবে তাকে তিনি ধ্বংস করে দেবেন।(ফিকহুর রিযা (আঃ), পৃঃ ৩৭২)

اَلکِبرُ رِدَاءُ اللهِ مَن نَازَعَ اللهَ رِدَاءَهُ قَصَمَهَ .

৩৯. মহান আল্লাহ ঐ মুমিনের সৎকর্ম ( আমল ) কবুল করবেন না যে অন্তরে অপর কোন মুমিনের ব্যাপারে কুধারণা পোষণ করে।(ফিকহুর রিযা (আঃ),পৃঃ৩৬৯)

لَا یَقبَلُ اللهُ عَمَلَ عَبدٍ وَ هُوَ یُضمِرُ فِی قَلبِهِ عَلَی مُؤمِنٍ سُوءَاً.

৪০. তোমাদের উচিত লোভ-লালসা ও হিংসা-দ্বেষ পরিত্যাগ ও বর্জন করা। কেননা এ দুটো বিষয় ( লোভ-লালসা ও হিংসা-দ্বেষ ) অতীতের উম্মতগুলোকে ধ্বংস করেছে। (বিহারুল আনওয়ার , খঃ৭৮ , পৃঃ ৩৪৬)

إِیَّاکُم وَ الحِرصَ وَ الحَسَدَ فَإِنَّهُمَا أَهلَکَا الأُمَمَ السَّابِقَةَ .

৪১. গৃহস্বামীর উচিত নিজ পরিবারের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও সচ্ছলতার জন্য চেষ্টা ও ব্যয় করা যাতে তারা (পরিবার-পরিজন) যেন তার মৃত্যু কামনা না করে।(মান লা ইয়াদুরুহুল ফাকীহ , খঃ২ , পৃঃ ৬৮)

یَنبَغِی لِلرَّجُلِ أَن یُوَسِّعَ عَلَی عَیَالِهِ لِئَلَّا یَتَمَنَّوا مَوتَهُ .

৪২. যে উপকারীর শুকর ( তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ) করে না সে মহান আল্লাহরও শুকর করে না ( অর্থাৎ স্রষ্টার প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না)।(উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ), খঃ২ , পৃঃ ২৪)

مَن لَم یَشکُرِ المُنعِمَ مِنَ المَخلُوقِینَ لَم یَشکُرِ اللهَ عَزَّ وَ جَلَّ .

৪৩. দানশীল ব্যক্তি মানুষের খাদ্য থেকে আহার করে যাতে তারাও ( লোকেরা ) তার খাদ্য থেকে আহার করে , আর কৃপণ ব্যক্তি অন্যদের খাবার থেকে আহার করে না যাতে তারাও তার খাবার থেকে আহার না করে।(উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ), খঃ২ , পৃঃ ১২)

اَلسَّخِیُّ یَأکُلُ مِن طَعَامِ النَّآسِ لِیَأکُلُوا مِن طَعَامِهِ وَ البَخِیلُ لَا یَأکُلُ مِن طَعَامِ النَّاسِ لِئَلَّا یَأکُلُوا مِن طَعَامِهِ.

৪৪. যে ব্যক্তি সময়কে গালমন্দ ও তিরস্কার করবে তাকে গালমন্দ ও তিরস্কারে দীর্ঘ সময় ব্যয় করতে হবে ( অর্থাৎ তার তিরস্কার ও গালমন্দ হবে দীর্ঘস্থায়ী )।(উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ), খঃ২ , পৃঃ ৫৩)

مَن عَتَبَ عَلَی الزَّمَانِ طَالت مَعتَبَتُهَ .

৪৫. দুনিয়ায় ( পার্থিব জগতে ) জনগণের নেতা হচ্ছেন দানশীল ব্যক্তিরা এবং আখেরাতে ( পরলোকে ) জনগণের নেতা হচ্ছেন মুত্তাকীগণ ( খোদাভীরুগণ )।(সাহীফাতুর রিযা (আঃ),পৃঃ৮৬)

سَادَةُ النَّاسِ فِی الدُّنیَا الأَسخِیَاءُ وَ سَادَة النَّاسِ فِی الآخِرَةِ الأَتقِیَاءُ

৪৬. তিক্ত ও কটু হলেও তোমরা সত্যের উপর ধৈর্যধারণ করো ( প্রতিষ্ঠিত ও দৃঢ়পদ থেকো)।(ফিকহুর রিযা (আঃ), পৃঃ৩৬৮)

 

اِصبِرُوا عَلَی الحَقِّ وَ إِن کَانَ مُرَّاً

৪৭. তোমাদের মুখ হচ্ছে তোমাদের প্রভুর সাথে যোগাযোগ করার পথ ও মাধ্যম। সুতরাং মিসওয়াক করে ( দাঁত মেজে ) নিজ মুখ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখ।(সাহীফাতুর রিযা (আঃ), পৃঃ৫৪)

أَفوَاهُکُم طُرُقٌ مِن طُرُقِ رَبِّکُم فَنَظِّفُوهَا بِالسِّوَاکِ.

৪৮. মহান আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়াদি ( হারামগুলো ) পরিত্যাগ ও বর্জন এবং মুমিনকে কষ্টদান থেকে বিরত থাকার চেয়ে বেশি উপকারী আর কোনো তাকওয়া-পরহেজগারী নেই।(বিহারুল আনওয়ার , খঃ৭৮ , পৃঃ ৩৪৮)

لَا وَرَعَ أَنفَعُ مِن تَجَنُّبِ مَحَارِمِ اللهِ وَ الکَفِّ عَن أَذَی المُؤمِنِ .

৪৯. যে ব্যক্তি নিজ নফসের ( প্রবৃত্তি ) হিসাব-নিকাশ (ও বিচার) করে সে লাভবান হয় এবং যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির (নফস) ব্যাপারে উদাসীন থাকে সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।(বিহারুল আনওয়ার , খঃ৭৮ , পৃঃ৩৫৫)

مَن حَاسَبَ نَفسَهُ رَبِحَ وَ مَن غَفَلَ عَنهَا خَسِرَ .

৫০. যে ব্যক্তি বিচক্ষণতার সাথে নিজ কর্ম সম্পাদন করে না সে হচ্ছে ভুল পথে ভ্রমণকারী পথিকের ন্যায় যার সফরের ( ভ্রমণের ) গতি যত বাড়বে ততই সে সঠিক পথ ( আসল লক্ষ্য ) থেকে ভ্রষ্ট হবে ও দূরে চলে যাবে।(ফিকহুর রিযা (আঃ), পৃঃ৩৮১)

اَلعَامِلُ عَلَی غَیرِ بَصِیرَةٍ کَالسَّائِرِ عَلَی غَیرِ الطَّرِیقِ لَا یَزِیدُهُ سُرعَةُ السَّیرِ إِلَّا بُعدَاً عَنِ الطّرِیقِ .

৫১. মহান আল্লাহ ঐ ব্যক্তিকে ঘৃণা করেন যার ঘর আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও আক্রমণকারীকে প্রতিহত করে না ও তার বিরুদ্ধে লড়ে না। (উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ) , খঃ , পৃঃ ২৮)

إِنَّ اللهَ عُزَّ وَ جَلَّ یُبغِضُ رَجُلَاً یُدخَلُ فِی بَیتِهِ وَ لَا یُقَاتِلُ.

৫২. পরস্পর যুদ্ধরত দু দলের মধ্যে ঐ দল (যুদ্ধে) বিজয়ী হবে যারা হচ্ছে বেশি ক্ষমাশীল।(তুহাফুল উকূল , পৃঃ৫২৪)

مَا التَقَت فِئَتَانِ قَطُّ إِلَّا نُصِرَ أَعظَمُهُمَا عَفوَاً .

৫৩. যে ব্যক্তি সবার কাছে প্রিয় হতে চায় তার উচিত গোপনে ও প্রকাশ্যে ( সর্বাবস্থায় ) মহান আল্লাহকে ভয় করা।(ফিকহুর রিযা (আঃ), পৃঃ৩৮১)

مَن أَرَادَ أَن یَکُونَ أَعَزَّ النَّاسِ فَلیَتَّقِ اللّهَ فِی سِرِّهِ وَ عَلَانِیَتِهِ

৫৪. বুদ্ধিবৃত্তি ( আকল ) হচ্ছে মহান আল্লাহর দান ও আশীর্বাদ (অর্থাৎ তা মানুষের অর্জিত নয় বরং তা হচ্ছে স্রষ্টা প্রদত্ত)এবং ভদ্রতা ও শিষ্টাচার ( আদব-কায়দা) হচ্ছে কষ্টার্জিত ( অর্থাৎ কষ্ট করে ভদ্রতা ও আদব-কায়দা শিখতে ও অর্জন করতে হয় এবং এর জন্য চেষ্টা-সাধনা ও কষ্ট সহ্য করতেই হয়।)।(তুহাফুল উকূল,পৃঃ৩৪২)

اَلعَقلُ حِبَاءٌ مِنَ اللّهِ وَ الأَدَبُ کُلفَةٌ .

৫৫. কাজ করার আগে চিন্তা-ভাবনা করা তোমাকে আফসোস ও পরিতাপ ( অর্থাৎ কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হওয়া ) থেকে নিরাপদ রাখবে।(উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ),খঃ২,পৃঃ৫৪)

اَلتَّدبِیرُ قَبلَ العَمَلِ یُؤمِنُکَ مِنَ النَّدَمِ .

৫৬. চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে আয়নাস্বরূপ যা তোমাকে তোমার দোষ-ত্রুটি ও গুণগুলো দেখিয়ে দেয়।(ফিকহুর রিযা (আঃ),পৃঃ৩৮০)

اَلتَّفَکُّرُ مِرآتُکَ تُرِیکَ سَیِّئَاتِکَ وَ حَسَنَاتِکَ .

৫৭. সচ্ছলতা ও সম্মান (সদা) ঘূর্ণনরত ( অর্থাৎ অস্থিতিশীল ও স্বল্পস্থায়ী ), তাই যখন তারা ( সচ্ছলতা ও সম্মান ) মহান আল্লাহর উপর ভরসাকারীকে পাবে তখন তার কাছে স্থিতিশীল হবে ও স্থায়ীভাবে থেকে যাবে।(ফিকহুর রিযা (আঃ),পৃঃ৩৫৮)

إِنَّ الغِنَی وَ العِزَّ یَجُولَانِ فَإِذَا ظَفِرَا بِمَوَاضِعِ التَّوَکُّلِ أَوطَنَا.

৫৮. হাদীয়া ( উপহার-উপঢৌকন ) অন্তরগুলো থেকে ঘৃণা দূর করে।(উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ),খঃ২, পৃঃ৭৪)

اَلهَدِیَّةُ تُذهِبُ الضَّغَائِنَ مِنَ الصُّدُورِ.

৫৯. বিনয় ও নম্রতা হচ্ছে যে তুমি অন্যদেরকে ঠিক সেই জিনিসটাই দেবে যার অনুরূপ তুমি পছন্দ কর যে তারা তোমাকে দিক।(মুসনাদুল ইমামির রিযা (আঃ),খঃ১,পৃঃ২৭৪)

التَّوَاضُعُ أَن تُعطِیَ النَّاسَ مِن نَفسِکَ مَا تُحِبُّ أَن یُعطُوکَ مِثلَهَ.

৬০. যে বান্দা মহান আল্লাহর জন্য ৪০ প্রভাত ( দিন ) একনিষ্ঠা ও একাগ্রতা (ইখলাস) সহকারে ইবাদত-বন্দেগী করবে তার(ঐ বান্দার) অন্তঃকরণ থেকে তার কণ্ঠে প্রজ্ঞার ঝর্ণা প্রবাহিত হবে।(উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ),খঃ২,পৃঃ৬৯)

مَا أَخلَصَ عَبدٌ لِلهِ عَزَّ وَ جَلَّ أَربَعِینَ صَبَاحَاً إِلَّا جَرَت یَنَابِیعُ الحِکمَةِ مِن قَلبِهِ عَلَی لِسَانِهِ

৬১. দান-সদকা দাতা ( সদকা প্রদানকারী )থেকে অনিবার্য ( অকাট্য ) বিপদাপদ দূর করে ( অর্থাৎ দানকারীকে অবশ্যম্ভাবী বিপদাপদ থেকে নিরাপদ রাখে ও রক্ষা করে ।) (ফিকহুর রিযা, পৃঃ ৩৪৭ )

إِنَّ الصَّدَقَةَ تَدفَعُ القَضَاءَ المُبرَمَ عَن صَاحِبِهِ .

৬২. যে ব্যক্তি নিজে চায় সবচেয়ে শক্তিশালী মানুষ হতে তার উচিত মহান আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল (ভরসা) করা।(ফিকহুর রিযা, পৃঃ ৩৫৮)

مَن أَرَادَ أَن یَکُونَ أَقوَی النَاسِ فَلیَتَوَکَّل عَلَی اللهِ .

৬৩. সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ (কামিল) মুমিন হচ্ছে সেই মুমিন যে সবচেয়ে ভালো (সুন্দর) চরিত্রের অধিকারী।(জামিউল আখবার , পৃঃ ১২৫)

أَکمَلُ المُؤمِنِینَ إِیمَانَاً أَحسَنُهُم خُلقَاً .

৬৪. মহান আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের (ঈমান) পর বুদ্ধিবৃত্তির ( আকল ) সর্বোচ্চ চূড়া হচ্ছে মানুষের সাথে বন্ধুত্ব এবং ভালো মন্দ নির্বিশেষে সবার সাথে সদাচরণ।( উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ) , খঃ ২ , পৃঃ ৩৫ )

رَأسُ العَقلِ بَعدَ الإِیمَانِ بِاللهِ التَّوَدُّدُ إِلَی النَّاسِ وَ اصطِنَاعُ الخَیرِ إِلَی کُلِّ بِرٍّ وَ فَاجِرٍ .

৬৫. (মহান আল্লাহর)নেয়ামতগুলো অস্বীকার করা হচ্ছে এমন পাপ যার শাস্তি অন্য সব পাপের চেয়ে দ্রুত আসে।(মুসনাদুল ইমাম আর রিযা (আঃ) , খঃ ২ , পৃঃ ২৮০ )

أَسرَعُ الذُّنُوبِ عُقُوبَةً کُفرَانُ النِّعَمِ .

৬৬. ভর্ৎসনা ও নিন্দাবিহীন ক্ষমাই হচ্ছে সুন্দর ক্ষমা। (চল্লিশ হাদীস , পৃঃ ১২০ )

الصَّفحُ الجَمِیلُ : العَفوُ مِن غَیرِ عِتَابٍ .

৬৭. পুণ্যের গুপ্ত ধনভাণ্ডারগুলোর অন্তর্গত হচ্ছে নেক আমল ( সৎ কর্ম ) গোপন রাখা এবং বিপদাপদে ধৈর্যধারণ এবং তা প্রকাশিত হতে না দেয়া। ( উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ), খঃ২ , পৃঃ ৩৮ )

مِن کُنُوزِ البِرِّ : إِخفَاءُ العَمَلِ وَ الصَّبرُ عَلَی الرَّزَایَا وَ کِتمَانِ المَصَائِبِ .

৬৮. মুমিন ( প্রতিশোধ গ্রহণে ) সক্ষম হলে তার ন্যায্য (প্রাপ্য) অধিকারের (হক) চেয়ে বেশি কিছু গ্রহণ করে না।(চল্লিশ হাদীস , পৃঃ ১২৩)

اَلمُؤمِنُ إِذَا قَدَرَ لَم یَأخُذ أَکثَرَ مِن حَقِّهِ .

৬৯. মুমিন ক্রুদ্ধ ও রাগাম্বিত হলে তার রাগ ( ক্রোধ ) তাকে সত্যের (চৌহদ্দি) থেকে বের করে দেয় না ( অর্থাৎ তাকে সত্য থেকে বিচ্যুত করে না)।(চল্লিশ হাদীস , পৃঃ ১২৩)

اَلمُؤمِنُ إِذَا غَضِبَ لَم یُخرِجهُ غَضَبُهُ مِن حَقٍّ .

৭০. যে ব্যক্তি মুসলমানদের বিষয়াদি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা ছাড়াই দিন শুরু করে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত নয় ( অর্থাৎ সে মুসলমান নয় )। ( ফিকহুর রিযা , পৃঃ ৩৬৯ )

مَن أَصبَحَ لَا یَهتَمُّ بِأمرِ المُسلِمِینَ فَلَیسَ مِنهُم .

৭১. মুসলমান হচ্ছে সেই ব্যক্তি যার কণ্ঠ ও হাত থেকে মুসলমানরা নিরাপদ থাকে।( উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ) , খঃ ২ , পৃঃ ২৪ )

اَلمُسلِمُ : الَّذِی یَسلَمُ المُسلِمُونَ مِن لِسَانِهِ وَ یَدِهِ .

৭২. যে ব্যক্তি নিজের কদর ( যোগ্যতা ও সামর্থ্য ) সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সে ধ্বংস হয় না।( উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ) , খঃ ১ , পৃঃ ২৯৩ )

مَا هَلَکَ امرُؤٌ عَرَفَ قَدرَهُ .

৭৩. যে ব্যক্তি নিজের জন্য (ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য) নেতৃত্ব চায় করে ( অর্থাৎ নেতা হতে চায় )সে ধ্বংস ও অধঃপতিত হয়। কারণ, নেতৃত্ব কেবল নেতৃত্বের যোগ্য ব্যক্তির জন্য মানানসই (এবং এটা কেবল তার জন্যই শোভা পায়)।( ফিকহুর রিযা (আঃ) , পৃঃ ৩৮৪ )

مَن طَلَبَ الرِّئَاسَةَ لِنَفسِهِ هَلَکَ فَإِنَّ الرِّئَاسَةَ لَا تَصلُحُ إِلَّا لِأَهلِهَا .

৭৪. যে ব্যক্তি যে কোনো জিনিস- এর সঠিক পথে অন্বেষণ করে সে পদস্খলিত হয় না। আর পদস্খলিত হলেও ( পদস্খলন থেকে ) পরিত্রাণের (নাজাত) পথ ও উপায় তার জন্য বন্ধ ও রুদ্ধ হয় না।( বিহারুল আনওয়ার , খঃ ৭৮ , পৃঃ ৩৫৬ )

مَن طَلَبَ الأَمرَ مِن وَجهِهِ لَم یَزِلَّ فَإِن زَلَّ لَم تَخُذ لَهُ الحِیلَةُ .

৭৫. দানশীল (উদার ও মহানুভব ) ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাকের নিকটবর্তী , বেহেশতের নিকটবর্তী এবং মানুষেরও নিকটবর্তী। ( চল্লিশ হাদীস , পৃঃ ১২১ )

اَلسَّخِیُّ قَرِیبٌ مِنَ اللهِ قَرِیبٌ مِنَ الجَنَّةِ قَرِیبٌ مِنَ النَاسِ .

৭৬. ঈমানের লক্ষণগুলোর মধ্যে হচ্ছেঃ ১. গোপন বিষয় (গোপনীয়তা) রক্ষা করা , ২.বিপদাপদে ( দুঃখ-কষ্ট,দারিদ্র ও অভাবে ) ধৈর্যধারণ এবং ৩.মানুষের সাথে সদ্ভাব ও সদাচরণ।(চল্লিশ হাদীস, পৃঃ ১২৪)

مِن عَلَامَةِ إِیمَانِ المُؤمِنِ کِتمَانُ السِّرِّ وَ الصَّبرُ فِی البَأسَاءِ وَ الضَّرَّاءِ وَ مُدَارَاةُ النَّاسِ .

৭৭. ফকীহ ( ধর্ম সংক্রান্ত গভীর জ্ঞান ও ব্যুৎপত্তির অধিকারী আলেম ) হওয়ার লক্ষণগুলোর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেঃ ১, সহিষ্ণুতা, ২. জ্ঞান এবং ৩. মৌনতাবলম্বন।(উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ),খঃ১, পৃঃ ৩৫৮(

مِن عَلَامَاتِ الفَقِیهِ : الحِلمُ وَ العِلمُ و الصَّمتُ .

৭৮. পরকালের জন্য নিকৃষ্ট পাথেয় হচ্ছে মহান আল্লাহর বান্দাদের উপর অন্যায় ও জোর-জুলুম করা।(মুসনাদুল ইমামির রিযা (আঃ), খঃ ১ , পৃঃ ২৯২ )

بِئسَ الزَّادُ إِلَی المَعَادِ العُدوَانُ عَلّی العِبَادِ .

৭৯. সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয় যে মুসলমানকে ঠকায় অথবা তার ক্ষতিসাধন করে অথবা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে।(উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ), খঃ ২, পৃঃ ২৯)

لَیسَ مِنَّا مَن غَشَّ مُسلِمَاً أُو ضَرَّهُ أَو مَاکَرَهُ

৮০. সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয় যার জ্বালাতন ও উৎপীড়ন থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না (ও রেহাই পায় না)।(উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ), খঃ২, পৃঃ ২৪)

لَیسَ مِنَّا مَن لَم یَأمَن جَارُهُ بَوَائِقَهُ .

৮১. ( কারো প্রতি অন্যায় ও নাহকভাবে ) রাগাম্বিত ও ক্রুদ্ধ হয়ো না, কারো কাছে কিছু চেয়ো না এবং নিজের জন্য যা নিয়ে সন্তুষ্ট থাক ও পছন্দ কর ঠিক সেটা নিয়ে অন্যদের জন্যও সন্তুষ্ট থাক ও পছন্দ কর।(মুসনাদুল ইমামির রিযা (আঃ), খঃ১, পৃঃ ২৬৭)

لَا تَغضَب وَ لَا تَسأَلِ النَّاسَ وَ ارضَ لِلنَّاسِ مَا تَرضَی .

৮২. স্বয়ং মদ হারাম (নিষিদ্ধ) এবং সব নেশাকর পানীয়ই হারাম। অতএব, কোন বস্তুর বেশি পরিমাণ যদি নেশার উদ্রেক করে তাহলে ঐ বস্তুর অল্প পরিমাণও হারাম হয়ে যাবে।( ফিকহুর রিযা (আঃ) , পৃঃ ২৮০ )

اَلخَمرُ حَرَامٌ بِعَینِهِ وَالمُسکِرُ مِن کُلِّ شَرَابٍ فَمَا أَسکَرَ کَثِیرُهُ فَقَلِیلُهُ حَرَامٌ .

৮৩. মানুষের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ ও বন্ধুত্ব হচ্ছে-বুদ্ধিমত্তার অর্ধেক।(তুহাফুল উকূল , পৃঃ ৫২০)

اَلتَّوَدُّدُ إِلَی النّاسِ نِصفُ العَقلِ

৮৪. নেয়ামতপ্রাপ্ত ( সচ্ছল ) ব্যক্তির উচিৎ নিজ পরিবারের জন্য সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও সচ্ছলতা আনয়ন ( অর্থাৎ তাদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য ব্যয় ও যথোপযুক্ত ভরণ-পোষণের সুব্যবস্থা করা )। (তুহাফুল উকূল , পৃঃ ৫১৯)

صَاحِبُ النِّعمَةِ یَجِبُ عَلَیهِ أَن یُوَسِّعَ عَلَی عَیَالِهِ .

৮৫. কোন মুসলমানকে ভীত-সন্ত্রস্ত করা ( ভয় দেখানো ) কোনো মুসলমানের জন্য জায়েয ( বৈধ ) হবে না।(উয়ূনু আখবারির রিযা (আঃ), খঃ২ , পৃঃ ৭১)

لَا یَحِلُّ لِمُسلِمٍ أُن یُرَوِّعَ مُسلِمَاً .

৮৬. যে ব্যক্তি নিজের দারিদ্র ও অভাব-অনটনের কথা অন্যদের কাছে প্রকাশ করে সে তাদের কাছে নিজেকেই অপদস্থ ও খাটো ( বেআব্রু ) করে।( ফিকহুর রিযা (আঃ), পৃঃ ৩৬৭)

مَن أَبدَی ضُرَّهُ إِلَی النَّاسِ فَضَحَ نَفسَهُ عِندَهُم .

৮৭. মন্দ,অসৎ ও দুষ্ট প্রকৃতির লোকদের সঙ্গ-দান সৎ ও ভালো ব্যক্তিদের ব্যাপারে কু-ধারণার উদ্রেক করে ( অর্থাৎ সৎ ও ভালো লোক যদি অসৎ ও মন্দ লোকের সাথে উঠা-বসা করে ও তার সঙ্গী হয় তাহলে তার ব্যাপারে লোকেরা সন্দেহ ও মন্দ ধারণা পোষণ করবেই।)।(উয়ূনু আখবারির রিয়া (আঃ) , খঃ২ , পৃঃ ৫২)

مُجَالَسَةُ الأَشرَارِ تُورِثُ سُوءَ الظَّنَّ بِالأَخیَارِ .

৮৮. মহান আল্লাহ পাকের প্রতি আত্মসমর্পণ,দানশীলতা(পুণ্য করা) এবং ইয়াকীন ( নিশ্চিত খাঁটি বিশ্বাস )- এ তিন বিষয়ের চেয়ে বেশি সম্মানজনক ও গৌরবোজ্জ্বল কোনো বিষয় আসমান হতে অবতীর্ণ হয় নি।( ফিকহুর রিযা (আঃ), পৃঃ ৩৫৩)

مَا نَزَلَ مِنَ السَّمَاءِ أَجَلُّ وَ لَا أَعَزُّ مِن ثَلَاثَةٍ : التَّسلِیمِ وَ البِرِّ وَ الیَقِینِ .

মহান আল্লাহ পাক আমাদেরকে ইমাম রিযা (আঃ) – এর এ সব অমিয় বাণী ও শিক্ষা আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করার তৌফিক দিন।

অনুবাদক: মোহাম্মাদ মুনীর হুসাইন খান

প্রকাশিত: 1
পর্যালোচনা করা হচ্ছে: 0
প্রকাশযোগ্য নয়: 0
nlwtgmdj
0
0
20
captcha