বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছেন শান্তিকামীরা। নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতে (আইসিজে) বুধবার রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে সুচির বক্তব্যের পর এ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
এর অংশ হিসেবে শান্তিতে নোবেল জয়ী ৮ ব্যক্তিত্ব এ সংক্রান্ত অপরাধ স্বীকার করে নেয়ার জন্য সু চির প্রতি আহ্বান জানান। এর আগে এ ঘটনায় চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে মিয়ানমারের চার জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
ইসলামিক অর্গানাইজেশন অব কো-অপারেশনের (ওআইসি) পক্ষে গাম্বিয়ার করা মামলার শুনানি শুরুর আগে থেকেই বিশ্বজুড়ে মিয়ানমার সরকার ও সুচির সমালোচনা হচ্ছিল। আন্তর্জাতিকভাবে নন্দিত ব্যক্তিত্ব থেকে সুচি নিন্দা ও ধিক্কারের পাত্রে পরিণত হয়। শুনানির প্রথম দিন মঙ্গলবারও হেগসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়।
শুনানির দ্বিতীয় দিন বুধবার মিয়ানমার তাদের বক্তব্য পেশ করে। এদিনও বিশ্বজুড়ে অব্যাহত ছিল প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। মামলার শুনানিতে প্রথমেই দেশটির স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সুচি রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ইতিহাস তুলে ধরেন। এরপর সামরিক বাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হামলা ও এর পরিপ্রেক্ষিতে সহিংসতা সৃষ্টি হয় বলে দাবি করে।
সুচি রাখাইনে সহিংসতার কথা স্বীকার করলেও একে কোনোভাবেই গণহত্যা বলা যায় না বলে মন্তব্য করেছে। সুচি আরও বলেছে, দুঃখজনকভাবে গাম্বিয়া রাখাইন রাজ্যের একটি অসম্পূর্ণ, ভ্রান্তিকর চিত্র উপস্থাপন করেছে। রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি ‘জটিল’ উল্লেখ করে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ‘দুর্দশা’র কথাও স্বীকার করে সুচি।
গণহত্যাকে অস্বীকার করে সুচির দেয়া এ বক্তব্যের পরই বিশ্বজুড়ে নিন্দা জানানো শুরু হয়। টেলিভিশনে বক্তব্য দেখার পরপরই কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরের রোহিঙ্গারা তাকে ‘মিথ্যাবাদী’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, সুচির বক্তব্য সত্য ঘটনার সম্পূর্ণ বিপরীত।
সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমরা মিয়ানমারে বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন মহলের চাপ এবং বৈষম্যের শিকার হয়েছে। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত হামলার ফলে ৭ লাখের অধিকা রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। iqna