IQNA

ধনী সভ্য কানাডার বঞ্চিত নিগৃহীত নির্যাতিত আদিবাসীরা বিশুদ্ধ পানীয় জল থেকে বঞ্চিত

20:01 - January 27, 2022
সংবাদ: 3471345
তেহরান (ইকনা): কানাডার নেটিভদের জন্য পরিস্কার বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই । তারা বিভিন্ন ধরণের ব্যাকটেরিয়া ও  রোগজীবাণুর দূষণ এবং রাসায়নিক দূষণযুক্ত ( অবিশুদ্ধ ও দূষিত ) পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে। কানাডা সরকার এ সব নেটিভ ফার্স্ট নেশনস কমিউনিটির জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করে নি এমনকি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ২০১৫ সালে নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে নেটিভদের পরিস্কার ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন । কিন্তু তা তার শাসনামলে আজ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি ।

কানাডা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও সম্পদশালী দেশসমূহের অন্তর্ভুক্ত এবং এ দেশটিতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে বিশাল সুপেয় পানীয় জলের রিজার্ভও রয়েছে । কিন্তু এতদসত্ত্বেও এ দেশের সরকার সংখ্যালঘু নেটিভ ফার্স্ট নেশনস কমিউনিটিগুলোর সাথে পানীয় জল নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে চরম অমানবিক বর্ণবাদী বৈষম্যমূলক আচরণ করেই যাচ্ছে বহু দশক ধরে । পানির অপর নাম জীবন এবং নিরাপদ পানি সম্পদ ও পানীয় জল সকল মানুষের অধিকার । আজ কানাডার নেটিভ ফার্স্ট নেশনস কমিউনিটি সমূহ দেশটির ভূমিপুত্র আদিবাসী হয়েও নিজ দেশে পরবাসী হয়ে পরাধীন জীবন যাপন করছে উড়ে এসে জুড়ে বসা , বহিরাগত ,  জবরদখলকারী  ( দখলদার ) , গণহত্যাকারী ইউরোপীয় শ্বেতাঙ্গ অভিবাসীদের কর্তৃত্ব ও আধিপত্যে । তারা সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে দেশটির বহিরাগত সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্বেতাঙ্গ ইউরোপীয় বংশোদ্ভূতদের সরকার কর্তৃক । কানাডা হচ্ছে তথাকথিত ঐ সব গণতান্ত্রিক দেশের উদাহরণ যে সব দেশে সংখ্যালঘুদের উপর চলে সংখ্যা গরিষ্ঠদের স্বৈরাচার ও অত্যাচারের চাবুক ও স্টিম্ রোলার । তাই কানাডীয় সরকার একদিকে তথাকথিত গণতান্ত্রিক হওয়া সত্ত্বেও আসলে স্বৈরাচারী অত্যাচারী এবং গণহত্যাকারীও বটে । আবার এই কানাডীয় সরকার মানবাধিকার ও বাক স্বাধীনতার ধ্বজাধারীও ! কানাডীয় সরকার ইরানের মতো পাশ্চাত্যের বৈরী দেশগুলোর বিরুদ্ধে প্রায় সময় মানবাধিকার ও বাক স্বাধীনতা লংঘনের বানোয়াট অভিযোগের ছড়িও ঘোরায়!!আজ (২৬ /১/২০২২ ) কানাডায়   ক্যাথলিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে একটি আবাসিক বিদ্যালয়ের নিহত শিক্ষার্থী আদিবাসী নেটিভ শিশুদের আরো একটি গোপন গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে । গত বছরের মে মাস থেকে এ পর্যন্ত ক্যাথোলিক গির্জা পরিচালিত দিবারাত্রি ২৪ ঘন্টার আবাসিক বিদ্যালয় সমূহের নিহত হাজার হাজার নিহত শিক্ষার্থী আদিবাসী নেটিভ শিশুদের শত শত লুক্কায়িত গোপন গণকবর আবিষ্কৃত হয়েছে যা কানাডার আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক গণ ও প্রজন্ম হত্যা বলেও ইতিমধ্যে খ্যাতি লাভ করেছে। এ ছাড়া এই গত তিন দশকে পূর্ববর্তী কানাডীয় সরকার সমূহ কর্তৃক হাজার হাজার আদিবাসী নারী ও মেয়ে শিশুকে অপহরণ করে গুম করে ফেলা হয়েছে যাদের হদিস কেউ জানে না এবং ট্রুডো নিজেও ১২০০ আদিবাসী নারী ও মেয়ে শিশুর অপহরণ ও গুম হয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে অপরাধীদের ন্যায় বিচার , যথোপযুক্ত  শাস্তিদান এবং হতভাগ্য ভিকটিমদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদেরকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া তো দূরের কথা কেবল মৌখিক ক্ষমা চাওয়ার মধ্যেই ক্ষান্ত থেকেছে!

বিগত চার পাঁচ শতাব্দী ধরে বহিরাগত দখলদার হানাদার ইউরোপীয় শ্বেতাঙ্গ অভিবাসীরা কানাডার আদিবাসী দেরকে মেরে কেটে চরম সংখ্যালঘু বানিয়ে তাদেরকে নিজ দেশে পরবাসী করে দিয়েছে!

আর যে অল্প কিছু সংখ্যক  আদিবাসী আছে তাদেরকেও খতম ও নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য দশকের পর দশক ধরে পরিস্কার বিশুদ্ধ নিরাপদ পানীয় জলের অধিকার থেকেও বঞ্চিত রেখেছে। 

এই হলো সভ্য কানাডার প্রকৃত স্বরূপ ও চিত্র।

আসলে কানাডা তথা পাশ্চাত্যে এ ধরণের পরস্পর বৈরী ও বিপরীত ধর্মী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের  সমাবেশ ( جمعُ الْأَضْدَادِ জামউল আযদাদ্ ) ঘটেছে যার পরিণতি সত্যি ভয়ঙ্কর প্রলয়ঙ্কারী ও ধ্বংসাত্মক ছাড়া আর কিছুই নয়। আর ইতিহাসও এ মহা সত্যের সাক্ষী ।

 

ইসলামী চিন্তাবিদ এবং গবেষক হুজ্জাতুল ইসলাম ওলায় মুসলেমিন মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

২৬/১/২০২২

captcha