IQNA

সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ

আরবাইনের পদযাত্রা একটি অলৌকিক ঘটনা এবং ইরাকিদের আতিথেয়তা একটি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান

18:55 - September 18, 2022
সংবাদ: 3472490
তেহরান (ইকনা): লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব বলেছেন: ইরাকের আরবাইন পদযাত্রায় ২০ মিলিয়ন জিয়ারতকারীর উপস্থিতি অনন্য এবং একটি অলৌকিক ঘটনার মতো এবং ইরাকিদের আতিথেয়তা একটি মহান ঐতিহাসিক দৃশ্য।
ইমাম হোসাইন (আ) এর শাহাদাতের চেহলাম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক শোকানুষ্ঠানে লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ এ কথা বলেন।
 
তিনি আরও বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইলি শত্রুদের মোকাবেলার একমাত্র পথ হচ্ছে প্রতিরোধ সংগ্রাম।
 
সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহর গতকালের ভাষণের কয়েকটি দিক রয়েছে। তবে এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা ছিল দখলদার জেরুজালেম শাসক গোষ্ঠীর অপরাধের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করা। এসময় তিনি জোর দিয়ে বলেন,  প্রতিরোধই এই শত্রুর অপরাধ মোকাবেলার একমাত্র উপায়।
 
সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ তার ভাষণে প্রথম যে বিষয়টি উল্লেখ করেন তা হলো সাবরা ও শাতিলার অপরাধ।  প্রায় ৪০ বছর আগে সংঘটিত এই অপরাধের সঙ্গে ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠী ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। তারা ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু এবং লেবাননের জনগণ উভয়কেই টার্গেট করেছিল যেখানে ৩,৫০০ ফিলিস্তিনি ছাড়াও  ১৯০০ লেবাননি নাগরিকও শহীদ হয়েছে। সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহর মতে, "সাবরা ও শাতিলার অপরাধটি আরব এবং ইহুদিবাদী শাসকদের মধ্যে সংগ্রামের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এবং জঘন্য অপরাধ। অথচ ইহুদিবাদী ও লেবাননের অপরাধীদের এখনও  এর জন্য শাস্তি দেওয়া হয়নি।
 
তাই ফিলিস্তিনি এমনকি লেবাননি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর অপরাধ অব্যাহত থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে একদিকে যেমন জঘন্যতম অপরাধ সংঘটিত করার জন্য ইহুদিবাদী গোষ্ঠীকে এর জন্য শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না অন্যদিকে দেশদ্রোহী শক্তি যারা ওই শাসক গোষ্ঠীকর সঙ্গে আতাত করে তাদেরকে সহযোগিতা করছে তাদেরকে শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। বরং  ইহুদিবাদী এবং পশ্চিমা সমর্থকদের সমর্থনে তারা এখনও রাজনৈতিক দৃশ্যপটে উপস্থিত রয়েছে।
 
হাসান নাসরুল্লাহ জোর দিয়ে বলেন, যতদিন এ ধরনের পরিস্থিতি বিরাজ করবে  ততদিন ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠীর অপরাধের অবসান হবে না এবং লেবাননের মতো দেশগুলো রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা স্থিতিশীলতা অর্জন করতে পারবে না।
 
সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহ তার গতকালের বক্তৃতায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেছেন তা হলো আমেরিকা লেবানন ও ফিলিস্তিনের দেশগুলোকেই একদিকে সমর্থন দেবে এবং অন্যদিকে ইহুদিবাদীদের অপরাধের অবসানের গ্যারান্টি দেবে। তবে এর কোনোটির ওপরই বিশ্বাস করা যায় না। লেবাননের হিজবুল্লাহ মহাসচিবের মতে "আমেরিকার গ্যারান্টিকে মেনে নেয়ার অর্থ হচ্ছে নিজেকে ক্ষতির মুখে ঠেলে দেয়া।"
 
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন: "যে কেউ আমেরিকার গ্যারান্টি মেনে নেয় সে  যেনো তার নারী, পুুরুষ ও শিশুদের কসাইখানায় নিয়ে যাচ্ছে।" মূলত, মার্কিন নীতি হচ্ছে ইহুদিবাদী অপরাধ বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে এই শাসক গোষ্ঠীর অপরাধ অব্যাহত রাখা।। তিনি বলেন, কথিত আব্রাহাম চুক্তি বা শতাব্দীর চুক্তি যা  সাবেক মার্কিন সরকার দ্বারা পরিকল্পিত এবং বাস্তবায়িত হয়েছিল সেখানে স্পষ্টতই দখলদার শাসকদের স্বার্থ রক্ষা করা হয়েছে এবং তা ফিলিস্তিনিদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। এর ফলে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠী আসকারা পেয়েছিল । 
 
সাইয়েদ হাসান নাসরাল্লাহর গতকালের বক্তৃতায় যে কৌশলগত দিকটি তুলে ধরা হয়েছে তা হল দখলদার শাসক গোষ্ঠীর অপরাধ যজ্ঞের ধারাবাহিকতা তুলে ধরা। পরিশেষে এই শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমেরিকার সমর্থন নীতি যা  প্রমাণ করে যে জেরুজালেমের দখলদার শাসকগোষ্ঠীর মোকাবেলা করার একমাত্র পন্থা হল প্রতিরোধ সংগ্রাম অব্যাহত রাখা। ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করে কোনো ফল পাওয়া যাবে না বলেই মনে করেন হাসান নাসরুল্লাহ।  4086051
captcha